ডেস্ক নিউজ: নারীদের নতুন কর্মক্ষেত্র তৈরির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে সিলেট জেলা পরিষদ। শুধু কর্মক্ষেত্র নয়, নারীদের স্বাবলম্বী করে তোলার প্রয়াস হিসেবে যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টির লক্ষ্যেও কাজ করে যাচ্ছে। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে জেলা পরিষদ বছরের বিভিন্ন সময়ে নারীদের প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণের আয়োজন করে থাকে। তবে, এই আয়োজন এখন আর শহর কেন্দ্রীক সীমাবদ্ধ নয়। শহরের গন্ডি পেরিয়ে আজ উপজেলা পর্যায়ে বিস্তৃত হয়েছে এই কার্যক্রম। কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সিলেটের তিন উপজেলায় ২০ জন করে মোট ৬০ জন মহিলাকে দেওয়া হয়েছে সেলাই মেশিন। সেলাই মেশিন প্রদানের আগে সেলাই বিষয়ে দেওয়া হয়েছে প্রশিক্ষণও। প্রশিক্ষণে বিভিন্ন উপজেলা থেকে প্রায় দেড়শোর অধিক মহিলা অংশ গ্রহণ করেন। বিতরণকৃত তিনটি উপজেলা হলো- সিলেট সদর, জকিগঞ্জ এবং বিশ্বনাথ উপজেলা।
শনিবার সেলাই মেশিন বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, প্রবাসী কল্যান ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমেদ এমপি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেটের পুলিশ সুপার মো. ফরিদ উদ্দিন এবং জেলা পরিষদের বিভিন্ন আসন থেকে নির্বাচিত সদস্যগন।
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও প্রবীণ রাজনীতিবিদ এডভোকেট লুৎফুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি বলেন-যে দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী, সে দেশে নারীকে দক্ষ জনশক্তিতে পরিনত করতে না পারলে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। তিনি বলেন, নারীরা এখন আর গৃহবন্দী নয়। মেধা আর যোগ্যতার প্রমান দিয়ে দেশের অর্থনীতিতে আজ অবদান রাখছে নারী সমাজের উলে¬খযোগ্য একটি অংশ। তিনি জেলা পরিষদের এমন উদ্যোগের ভুঁয়সী প্রশংসা করে বলেন, এই উদ্যোগ রক্ষণশীল সিলেটে নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে উল্লেযোগ্য ভুমিকা রাখতে সমর্থ হবে।
সিলেট জেলা পরিষদের সদস্য (সংরক্ষিত আসন-৩) সুষমা সুলতানা রুহি বলেন, শুধুমাত্র এইবারই নয়, এর আগেও বহুবার সিলেট জেলাপরিষদ নারীদের জন্য এমন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছিলেন। তিনি বলেন, এক সময় এই উদ্যোগ ছিল শহরকেন্দ্রীক। কিন্তু গ্রামের অবহেলিত মানুষেরা সেই সুযোগ গ্রহণ থেকে বঞ্চিত ছিল। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে তখন আমি কথা বলি আমাদের পরিষদে। পরিষদ সদস্যদের সম্মতিক্রমে তৎকালীন জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী আবদুল আহাদও আমার উত্থাপিত প্রস্তাব সাদরে গ্রহণ করেন এবং জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মহোদয়ও তাতে সম্মতি প্রকাশ করেন। এরই অংশ হিসেবে আজ সিলেটের বিভিন্ন উপজেলায় চলছে এই কার্যক্রম। যেখানে নারীরা যথাযথ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করার মধ্য দিয়ে নিজেদের উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরি করতে পেরেছেন’। তিনি বলেন, এখন গ্রামে স্বামী পরিত্যক্তা নারীরাও নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারছে। এই আনন্দ সত্যিই অবাক করার মতো ! গ্রামে গেলে অবাক হতে হয়, যে মহিলার সংসার আগে চলতোনা-তারাও প্রশিক্ষণ করার মধ্য দিয়ে আজ দুবেলা দুমোটো অন্নের যোগাড় করতে সমর্থ হয়েছেন। তিনি বলেন, আজ গ্রামের অসহায়, হতদরিদ্র, এতিম ও বিধবা মহিলাদের বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ পরবর্তী কর্মক্ষেত্রে স্বাবলম্বীতার গল্প আমাকে আরো প্রেরণা যোগায়-সাহস যোগায়।