ডেস্ক নিউজ: গোয়াইনঘাটের ৬নং ফতেহপুর ইউনিয়নের বিন্নাকান্দি উচ্চ বিদ্যায়লয়ের আঙ্গিনায় গড়ে তোলা হয়েছে অবৈধ পশুরহাট। সীমান্ত পেরিয়ে ভারত থেকে আসা অবৈধ গরু বিক্রয়ের জন্য অবৈধ গরুর হাট তৈরী করে রমরমা বানিজ্য চলছে সেখানে। বিদ্যালয় আঙ্গিনায় অবৈধ পশুরহাট সৃষ্ট গবাদি পশুর মল-মুত্রের উৎকট দুর্গন্ধে উক্ত বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী, স্থানীয় জনসাধারণ চলাচলে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এ ঘটনায় ছাত্রছাত্রী, শিক্ষানুরাগীসহ এলাকার শিক্ষা সচেতন সাধারণ মানুষজনের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
অভিযোগ ওঠেছে বিদ্যালয় সভাপতি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাক ইসমাইল আলী মাস্টার,বিদ্যালয় সহকারী প্রধান শিক্ষক ও ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান চৌধুরী,প্রধান শিক্ষক মহসিন উদ্দিন,সহ একটি চক্রের প্রকাশ্য শেল্টার ও মদদে এই অবৈধ পশুরহাট গড়ে ওঠেছে। স্থানীয় বিন্নাকান্দি গ্রামের সিরাজ উদ্দিনের ছেলে সাব্বির আহমদের অনুকুলে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকায় ১ বছরের জন্য ইজারা পেয়েছেন।
জানা যায়, বিদ্যালয়ের অফিস চলাকালে প্রতি শনি ও মঙ্গলবারে বেলা ২টা হইতে পশুরহাটের কার্যক্রম শুরু হয়ে গভীর রাত পর্যন্ত চলে পশু বিকিকিনি। উপজেলা প্রশাসন কিংবা শিক্ষা বিভাগের কোন ধরণের অনুমতি না নিয়ে এলাকার বিবেকবানদের দ্বারা বিবেকের গর্হিত এমন নোংরা কাজকে উৎসাহিত করায় তাদের ক্ষমতার শেকড় নিয়েও প্রশ্ন ওঠেছে। গত শনি ও রবিবার দু-দিন সরেজমিনে পরিদর্শন করে এই অবৈধ পশুর হাটের নানা চিত্র ফুটেওঠে।
পাওয়া যায় অবৈধ বানিজ্যীক খবরও । সরজমিনকালে এলাকাবাসির সুত্রে জানা যায বিগত দুমাস থেকে প্রতি শনি ও মঙ্গলবার বিন্নাকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ে আঙ্গিনায় অবৈধ পশুর হাটে প্রকাশ্যে চলে আসছে পশু বিকিকিনির কার্যক্রম। বিদ্যালয় চলাকালে বিদ্যালয় আঙ্গিনায় পশুর হাটের দুর্গন্ধে শিক্ষার্থীদের মুখে রুমাল, টিস্যু দিয়ে অতিক্রম করতে দেখা যায়।
এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রেহান উদ্দিন জানান, কোন বিদ্যালয় চলাকালে বিদ্যালয়ের আঙ্গিনায় পশুর হাটের সৃষ্ট পরিবেশ দুষনের দ্বারা ছাত্রছাত্রীরা বমি, খিচুনিসহ জনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাছাড়া বায়ু বাহিত হয়ে এ থেকে ছাত্রছাত্রীদের ডায়রিয়া, কলেরাসহ পেটের পীড়াসহ নানা রোগের আক্রান্ত হওয়া ও পশুর দ্বারা শিক্ষার্থীরা আহত হয়ে স্বাস্থ্যহানীর সম্ভাবনা আছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন রাজনৈতিক ও অপর একজন শিক্ষা সচেতন ব্যক্তি জানান, ১৯৩৫ সালে স্থাপিত বিন্নাকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের ইতিহাসে এমন নোংরা ঘটনা আর কখনো ঘটেনি। সামান্য কিছু টাকার জন্য বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, সদস্যরা, প্রধান শিক্ষকসহ জড়িতরা এমনটা করবে তা কল্পনাও করতে পারিনি। ১ হাজারের অধিক শিক্ষার্থী নির্ভর এ বিদ্যাপিঠের এমন চিত্র কাম্য হতে পারেনা।
এ ব্যাপারে কথা হলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহসিন উদ্দিন জানান,এই পশুর হাট বিদ্যালয়ে কোন পরিবেশ নষ্ট কিংবা সৌন্দর্য্যহানির ঘটনা ঘটায়না। বরং বিদ্যালয় আর্থিকভাবে লাভবানের একটি খাত। বিদ্যালয় লাভবান হচ্ছে এমনটা বলেলও সরজমিনকালে প্রধান শিক্ষক এ ক্ষেত্রে পশুর হাটের জন্য বিদ্যালয় আঙ্গিনা ইজারা দেয়া বাবদপ্রাপ্ত বিদ্যালয় তহবিলে জমা নিয়েছেন এম কোন রশিদ দেখাতে পারেননি। বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল আলী মাষ্টার জানান,এটা আমরা বিদ্যালয়ের স্বার্থে ইজারা দিয়েছি। এটা কোন অন্যায় কাজ নয়।
বিদ্যালয়ের স্বার্থে এটা আমরা স্থাপন করেছি। বিদ্যালয় আঙ্গিনায় স্থাপিত অভেধ পশুর হাটের ইজারাদার সাব্বির আহমদ জানান, বিদ্যালয় সভাপতি ইসমাইল আলী মাষ্টার, বিদ্যালয় সহকারী প্রধান শিক্ষক ও ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান চৌধুরী,প্রধান শিক্ষক মহসিন উদ্দিনসহ ৬ মৌজার অর্থাৎ পশ্চিম রাজের মতামতের ভিত্তিতে ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকায় মৌখিকভাবে আমাকে এই হাট ইজারা দিেেয়ছেন।
এ ব্যাপারে কথা হয় গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত কুমার পালের সাথে। তিনি জানান,এটা সম্পুর্ন অবৈধ ও এখতিয়ার বহির্ঃভুত কাজ। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় আর কোথাও এমন নোংরা নজির আছে কিনা জানিনা। বিদ্যালয় আঙ্গিনায় এই হাট অপসারণে করতে আমি প্রধান শিক্ষককে নির্দেশ দিয়েছি। অপসারণ না করলে আমি তার বিরোধ্যে অচিরেই ব্যবস্থা নিবো।
সূত্র: শ্যামল সিলেট