রূপগঞ্জ প্রতিনিধিঃ তার পরিচয় নানাভাবেই দেওয়া যায়। দেশের বরেণ্য সাংবাদিক, কলামিষ্ট, লেখক, গবেষক, কবি-ছড়াকার, চিত্রাকর ও দেশের সব প্রগতিশীল আন্দোলনের অগ্রবতী মানুষ মীর আব্দুল আলীম। জন্মের ৫২ বছর পূণ করলেন জাতির বিবেকসম মানুষটি। আজ তাঁর ৫২ তম জন্মদিন। মীর আব্দুল আলীম। একজন নক্ষত্র। অকুতোভয় কলম যোদ্ধা। বিনয়ী, অহিংস। পরোপকারী, নীতিবান। নানা গুণে গুণান্বিত বরেণ্য এ সাংবাদিক জন্মদিনেও সামাজিক ভাবনা মাথায় রেখেছেন। নিজের জন্মদিনে বৃক্ষরোপণ ও প্রতিবন্ধী শিশুদের খাবারের ব্যবস্থা করেছেন। জন্মদিন নিয়ে স্বভাবসুলভ স্বল্প কথায় তিনি বলেন, বাঁচতে হবে সমাজের মানুষের জন্য। জীবনে বাকী সময়টা মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাই। বাড়তি সময়টা যেনো অথপূণ হয়।
মীর আব্দুল আলীমের জন্ম ১৯৭০ সালের ২ জুলাই রূপগঞ্জ উপজেলার তারাব পৌরসভার রূপসী মীর বাড়িতে। তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা, কৃষিবিদ আলহাজ্ব মীর তাজউদ্দিন আহমেদ, রত্নগভা মা রাহাতুন নেছা। সাংবাদিকতার অঙ্গনে এক বিখ্যাত নাম মীর আব্দুল আলীম। এ দেশের যেসব সাংবাদিক বলিষ্ট লেখনী, পরিশ্রম ও মেধার বলে পেশার শীর্ষে পৌঁছেছেন, তিনি তাদের অন্যতম।
তিনি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং আন্তজার্তিক বিষয়ে অজস্র লেখা লিখেছেন। এগুলো দেশের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক যুগান্তর, বাংলাদেশ প্রতিদিন, ইত্তেফাক, সমকাল, ইনকিলাব, ডেইলি অবজারভার, ইনডিপেনডেন্টসহ সাময়িকী ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত হয়েছে। দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশের পত্রপত্রিকায় প্রকাশ হয়েছে তাঁর লেখা। কলকাতার জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল প্রথম কলকাতা, এই মূহুর্তেসহ আসামের পত্রিকায় লেখা প্রকাশিত হয়েছে। তিনি একজন সফল কলামিষ্ট। সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদান রাখার জন্য বেশ কয়েকটি সংগঠন তাঁকে পদক প্রদান করেছেন।
কবিতা, গল্প, উপন্যাস, রম্য রচনা, কলাম, ভ্রমণকাহিনী, শিশুতোষ রচনা –নানা কিছু লিখেছেন। চিত্র শিল্পেও তাঁর হাতের জুরি মেলাভার। চীন, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, নেপাল, ভুটান, ভারতসহ বেশ কয়েকটি দেশ ভ্রমণ করেছেন। লিখেছেন তিনটি বই। যা পাঠক সমাজে সমাদৃত হয়েছে। করছেন টিভি টক-শো। ধর্মভীরু, সদালাপী, বিনয়ী ও বন্ধুবৎসল মীর আব্দুল আলীম ২০০৯ সালে পবিত্র হজ্বব্রত পালন করেন। মীর আব্দুল আলীমের বত্তব্য, সবার উপড়ে মানুষ সত্য। আমি সারাটা জীবন অসহায়, নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষের পাশে থাকবো। পাশে থাকবো রূপগঞ্জের মানুষের। রূপগঞ্জ আমার প্রাণ।
মূলধারার সাংবাদিকতার পাশাপাশি তিনি দেশের নানাবিধ সংকট, সমস্যা সমাধান ও পরামর্শমুলক, প্রতিবাদমুলক কলাম লিখে চলেছেন অবিরাম। অর্থনৈতিক মুক্তি ও মানব কল্যাণ বিষয়ক গবেষনায় যুক্ত থাকার পাশাপাশি দেশের শীর্ষস্থানীয় জাতীয় দৈনিক ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলের পত্রিকায় জায়গা দখল করে নিয়েছেন। নিউইয়র্কের বহুল প্রচারিত ঠিকানা, ভারতের প্রথম কলকাতাসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বাংলা ভাষাভাষিদের পত্র পত্রিকায় নিয়মিত লেখা ছাঁপা হয় তাঁর। দেশী ও বিদেশী ইংরেজী মাধ্যমেও সমানতালে গুরুত্বপায় তার লেখনী। স্বীকৃতি সরূপ মাওলানা ভাসানী স্মৃতি পদক ও দেশীয় গুরুত্বপূর্ন বিভাগের সম্মাননা পদকের পাশাপাশি ভারতের শান্তি নিকেতন পদক, জার্মান ভিত্তিক আরজিএফ পদকসহ অসংখ্য পদক গ্রহণ করেছেন তিনি। লেখালেখির পাশাপাশি সমাজসেবায় তার পদচারণা।
দেশের জাতীয় সমস্যার বিষয়গুলো তুলে ধরার পাশপাশি সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়ে দেখেছেন নিজ উপজেলা রূপগঞ্জকে। রূপগঞ্জের সাংবাদিকদের উপযুক্ত নেতৃত্বদানে ও আস্থা অর্জনের ফলে রূপগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। এ অঞ্চলের সাংবাদিকদের এক্যবদ্ধ রাখতে স্থানীয় প্রশাসনের সনে যুক্ত থেকে অপরাধ দমন, উন্নয়নকাজে অংশ নেয়া, দরিদ্রদের সহায়তা,সাংস্কৃতিক অঙ্গনে অংশ নেয়া, মাদক ও বাল্য বিবাহ, নারী পাচার রোধে পথনাটিকা, সভা সমাবেশ , নদী রক্ষা আন্দোলনসহ বিভিন্ন সামাজিক কাজে উদ্যোগি হয়ে সক্রিয় ভূমিকা নেয়ায় সর্বমহলের আস্তাভাজন ও ভূঁয়সী প্রশংসার কুড়িয়েছেন তিনি। এছাড়াও একাধিক শিল্প প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত থেকে বেকার সমস্যা সমাধানে ভুমিকা রেখেছেন ব্যাপক।
স্থানীয়দের কম খরচে উন্নত ও আধুনিক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে জেলার সনামধন্য বেসরকারী চিকিৎসালয় আলরাফি হাসপাতালের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। আবার বরপাতে নিজ মালিকানায় প্রতিষ্ঠা করেছেন লাইফ এইড হসপিটাল নামের একটি উন্নত চিকিৎসালয়। তা পরিচালনা করছেন তার সুযোগ্য জৈষ্ঠ্য সন্তান ডাক্তার তানজিল এহসান অভি এবং পূত্রবধূ ডাক্তার আফরুন নেছা মুনা। আর এ লাইফ এইড হসপিটালের মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়নের তত্ববধানে ৩০ হাজার দরিদ্র পরিবারকে বিনামুল্যে চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন।স্থানীয় সামাজিক সংগঠন রূপগঞ্জ গ্র্যাজুয়েট এসোশিয়েসন, তারুন্যের বিজ্ঞানসহ বিভিন্ন তরুনদের উৎসাহ দিতে তাদের পৃষ্টপোষকতা করছেন তিনি। করোনাকালে স্থানীয় প্রতিবন্ধিদের মাঝে খাবার বিতরণসহ সরকারী তালিকা বঞ্চিত দরিদ্রদের বাড়ি বাড়ি ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছেন তিনি।
শুধু তাই নয়, পরিবেশ রক্ষায় বৃক্ষরোপন কর্মসূচী, শ্রমিকদের স্বার্থরক্ষা, রক্তদান কর্মসূচী, চিকিৎসাসেবায় অপ্রয়োজনীয় সিজার বন্ধের আন্দোলনে সক্রিয় রয়েছেন তিনি। গ্রামীণ ও লোকজ পুরনো ঐতিহ্য রক্ষায় পূর্বাচলের নিজ প্লটে প্রতিষ্ঠা করেছেন বাঙ্গালবাড়ি বাতিঘর নামে একটি জাদুঘর। যেখানে সংরক্ষিত রাখা হয়েছে প্রায় হারিয়ে যাওয়া তৈজস ও ব্যবহার্য্য বস্তু। পারিবারিক জীবনে তিনি দুই ছেলের জনক। বড় ছেলে ডাক্তার তানজিল এহসান অভি এবং ছোট ছেলে হাছান ইনতেসার নটরডেম কলেজে অধ্যয়নরত। তার স্ত্রী নাসরিন সুলতানাও লাইফ এইড হাসপাতালের চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত রয়েছেন।
কলামিষ্ট লায়ন মীর আব্দুল আলীম বলেন, যতদিন বাঁচি মানুষের উপকার করার চেষ্টা করবো।সেবার মাধ্যমেই বাঁচবো। সাধারন মানুষের কাছে কিছু স্মৃতিচিহ্ন রেখে যেতে চাই। এ সময় তিনি তার জন্মদিন উপলক্ষ্যে দেশবাসির কাছে দোয়া প্রার্থনা করেছেন। এদিকে মহান এ মানুষটির জন্মদিন উৎযাপনের বিগত বছরে জমকালো আয়োজন থাকলেও এবারই প্রথম করোনা পরিস্থিতির কারনে ঘরোয়া আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়েছেন রূপগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা। তারা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বৃক্ষরোপন, দরিদ্রদের অর্থ ও খাদ্য বিতরণের মাধ্যমে এ কর্মসূচী পালন করবেন বলে জানিয়েছে প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক খলিল সিকদার। এ উপলক্ষ্যে ২ জুলাই দুপুরে পূর্বাচলের বাঙ্গালবাড়িতে স্বাস্থ্য বিধি মেনে কেক কেটে দোয়া ও মুনাজাত অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানান তিনি।