নিজস্ব প্রতিবেদকঃ নীতি আদর্শের মধ্যদিয়ে ছাত্রলীগকে মর্যাদাপূর্ণ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (৪ জানুয়ারি) বিকেলে ছাত্রলীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এ আহ্বান জানান।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া ছাত্রদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে। শিক্ষাঙ্গনকে সন্ত্রাসীদের জায়গায় পরিণত করা হয়েছিল।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ছাত্ররা আমাদের ভবিষ্যত। ভবিষ্যেতে তারা দেশকে পরিচালনা করবেন। তাদের যদি বিপথে নামানো হয়, রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করার জন্য তাদের ব্যবহার করা হয় তাহলে তারা দেশকে নেতৃত্ব দেবে কীভাবে?’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘সততা-আদর্শ ছাড়া সফলতা আসবে না। সাময়িকভাবে নামডাক আসতে পারে, অর্থবিত্ত হতে পারে। কিন্তু দেশের ইতিহাসে মনে রাখার মতো কিছু করতে পারবেন না।’
ছাত্রলীগের সাংগঠনিক অভিভাবক বলেন, ‘২০২০ সাল। এই সালের ৪টা জানুয়ারি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ৭২ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করছে। এই বছরের ১৭ মার্চ জাতির পিতার জন্মশত বার্ষিকী আমরা পালন করব। ২০২০ সাল থেকে ২০২১ সাল আমরা মুজিববর্ষ ঘোষণা করেছি।’
তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান সরকার আমাদের ভাষার অধিকার কেড়ে নিতে চেয়েছিল। এর বিরুদ্ধে সংগ্রাম শুরু করে ছাত্রলীগ। আমরা দেখেছি, যখনই কোনো সংগ্রাম হয়েছে ছাত্রলীগ অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে।’
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল উল্লেখ করে বাঙালি জাতির ইতিহাসে ছাত্রলীগের নানা অবদানের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন তিনি। ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধসহ নানা সংগ্রামে ছাত্রলীগের অবদানকে স্মরণ করে তিনি বলেন, ১৯৪৯ সালে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সেদিক থেকে ভাবতে গেলে ছাত্রলীগই মুরুব্বি সংগঠন।
এর আগে দুপুর আড়াইটার দিকে পায়রা উড়িয়ে, পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন তিনি। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, জ্যেষ্ঠ নেতা ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবীর নানক, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খালেদ মোহাম্মদ আলী।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানের মঞ্চে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত ছাত্রলীগের অধিকাংশ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত থাকলেও অপসারিত রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে মঞ্চে দেখা যায়নি।
তবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত সংগঠনটির সাবেক নেতাদের কাতারে মূল মঞ্চে বসেন গণফোরামের মনোনয়নে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত সংসদ সদস্য সুলতান মোহাম্মদ মনসুর। তিনি ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, ডাকসু’র সাবেক ভিপি এবং আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের বাইরে গিয়ে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে সংসদে যান।
দুই দিনব্যাপী পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিনে রোববার (৫ জানুয়ারি) পালিত হবে রক্তদান কর্মসূচি। এরপর শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ, শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শেষ হবে।